
অধঃপতনের গভীরতা
ছোট্ট একটা ক্লিনিকে চেম্বারের কিছু রোগী ভর্তি হয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য। সেই ক্লিনিকের একজন কর্মচারী অনুরোধ করলো একটা মেয়েকে দেখে দেয়ার জন্য। বয়স ১৮/১৯ বছর হবে। ১০/১১ সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট। দেখতে ভালো ও স্মার্ট। চেকআপের পর জানালো বাচ্চা নষ্ট করবে।
বলো কি? কেন?
পরে নিবো, এখন রাখতে চাই না।
তোমার সাথে কে আছে? প্রথমে বলতে চাইল না। পরে সমবয়সী একটা ছেলেকে ফোন করে ডাকল।
বিয়ে হয়েছে? কিছু বলে না। দেখো, আমি এসব করি না। তোমরা অন্য কোথাও যাও। বুঝতে পারছি, তোমাদের বিয়ে হয়নি। পারলে তারাতাড়ি বিয়ে করে ফেলো।
না ম্যাডাম, এখন সম্ভব না। মাত্র আমরা অনার্সে ভর্তি হয়েছি। কারো পরিবার এখন বিয়ে দিতে রাজী হবে না।
তোমরা পরিবারের অপেক্ষায় আছো নাকি?! পরিবারের অনুমতি নিয়েছিলে এসব অসভ্য কাজে লিপ্ত হওয়ার আগে?!
আপনি কিছু একটা করে দেন, দুইজনে মিলে অনুরোধ।
আমি এসব বাজে কাজের সাথে নিজেকে কখনো সম্পৃক্ত করি না। আর এসময় বাচ্চা নষ্ট করতে গেলে যদি মেয়েটির জীবনের কোন রিক্স তৈরি হয় তার দায়িত্ব কে নিবে? তুমি নিবে?! যে কোন কিছু ঘটতে পারে। ছেলেটিকে বললাম। পারলে অভিভাবক ডেকে বিয়ের ব্যবস্থা করো।
না, তারা রাজী না। তেমন কোন অনুশোচনারও লক্ষণ দেখা গেলো না। পুরোটা সময় ওরা স্বাভাবিক। ক্লিনিকের ছেলেটিকে ডেকে একটু বকা দিলাম। তুমি কোন সাহসে এসব রোগী আমার কাছে পাঠাও? সে আমতা আমতা করে সরে গেল।
আরেকজন অবিবাহিত মেয়েকেও পেয়েছি এই সপ্তাহে যে কিনা চার মাসের প্রেগন্যান্ট, ঘটনাও প্রায় একই। এক বিদেশী স্বামীর স্ত্রীও এসেছে একই ধরনের ঘটনা নিয়ে। রোজার আগেই ঝামেলা শেষ করতে চায়! কারণ স্বামী ঈদের আগে বাড়ি আসবে!
এসব ঘটনা জাস্ট স্যাম্পল মাত্র। রোগ ছড়িয়ে পড়েছে সমাজের পুরো শরীরে। অভিভাবক, পিতা, মাতা, সমাজ, আলেম, ওলামা সবাই সবকিছু জানে, বুঝে। কিন্তু চুপ করে আছে। ফলে এসব অসভ্যতা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। এখন আর কেউ এসব শুনে আৎকে উঠে না। তেমন কিছু মনেও করে না। চোখের সামনে সবাই দেখছে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সবাই মিলে বিয়েকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে ফেলছে কিন্তু নষ্টামিকে স্বাভাবিক করে দিচ্ছে। আশেপাশে একটু খেয়াল করে দেখুন, নষ্টামি কত গভীরে চলে গিয়েছে। পুষ্পিতা