
মনজুরুল
চরম প্রতিকূলতার মাঝেও নিষ্ঠার সাথে কোনো কাজে লেগে থাকলে যে সফল হওয়া যায় তার প্রমাণ দিলেন অদম্য তরুণ মনজুরুল।
দিনের পর দিন না খেয়ে থাকা মনজুরুল মোর্শেদ আজ শত কোটি টাকার মালিক।
২০১৬ সালে বিদেশি এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান মনজুরুল মোর্শেদ। পরিবারসহ উত্তরায় একটি বাসা নিয়ে ভালোই কাটছিল মনজুরুলের। কিন্তু মাত্র তিন মাসের মাথায় চাকরিটা হারিয়ে চরম কষ্টে নিপতিত হয় তাদের জীবন।
ইনফোটেকের প্রতিষ্ঠাতা মনজুরুল মোর্শেদ নামের এই উদ্যোক্তা ২০১৭ সালে বেকার থাকা অবস্থায় এতটাই অর্থকষ্টে ছিলেন যে অনেক দিন তাকে অনাহারে কাটাতে হয়েছে। সম্বল ছিল শুধু একটি ভাঙ্গা মোবাইল ফোন। অভাবের তাড়নায় বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় স্ত্রীর গহনা। স্ত্রীর পরামর্শে চলে যান ঢাকা থেকে রাজশাহীতে।
তিনি ছিলেন আর্টস এর শিক্ষার্থী। মোবাইলে নেট চালানোর মত পয়সাও ছিল না তার পকেটে। বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করে ফ্রি ল্যান্সিং নিয়ে দিনরাত ঘাটাঘাটি করতে থাকেন মনজুরুল।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর শর্ট কোর্স করে তার যাত্রা শুরু। এরপর ইন্টারনেট ও ইউটিউবের সাহায্যে আউটসোর্সিংয়ের অন্যান্য ধাপগুলো সম্পর্কে ধারনা নেন।
তার একটি কাজ ক্লাইন্টের পছন্দ হওয়ায় ২৫০০ ডলারের কাজ জুটে। এরপরে আর পিছনে তাকাতে হয়নি তাকে। এলাকার তরুণদের নিয়ে টিম গঠন করে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। মনজুরুলের মাধ্যমে অনেক তরুণ তরুণীর আউটসোর্সিং এ আসার সুযোগ হয়।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি থেকে মাসিক ৫৮ হাজার ডলারে চাকরির প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেশের কথা ভেবে সেই অফারটি তিনি সেসময় লুফে নেননি। কথাগুলো অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবতা হলো ৫ বছর আগেও বেকার থাকা এই লোকটির প্রতিষ্ঠান এখন বছরে শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে।
যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও তার কাজ রয়েছে। বর্তমানে মনজুরুলের টিমে কাজ করছেন ১২০০ জন। এআই, সফটওয়্যার, এপস ও অন্যান্য কাজের মাধ্যমে দেশে আসছে বছরে হাজার কোটি ডলার। তিনি চান তার এই পথে এগিয়ে আসুক অন্য তরুণরা।