
ভোর
৪টা থেকে ভোর সাড়ে ৫টা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে দিনের সবচেয়ে গৌরবময় সময় হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই সময়ের মধ্যে শক্তিশালী রহস্য রয়েছে। ভারতে এই সময়টাকে স্রষ্টার সময় বলা হয়। এ সময়ে মানুষের উৎপাদনশীলতা সর্বোচ্চ থাকে। এই সময়টাতে সৃষ্টিশীলতাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানো যায়। পাশাপাশি এটি শরীরের সুস্থতা নিশ্চিত করার সেরা সময়।
এসময় ঘুম থেকে জেগেই নিজেকে পরিছন্ন করা উচিত। নাক-চোখ তথা পুরো মুখমন্ডল পানি দিয়ে ধৌত করা এবং হাত-পা ধৌত করা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। অতপর সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করা মানসিক প্রশান্তির জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়া রবের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া সব প্রাপ্তির জন্য। আপনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন ভোরে ঘুম থেকে ওঠা কর্মক্ষেত্র তথা গোটা জীবনের জন্যই ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে।
ইসলামে দৃষ্টিতে ইবাদত ও কর্ম উভয়ের জন্য ভোরে ওঠা অত্যন্ত বরকতময়। মসজিদে জামায়াতে ফজরের নামাজ পড়ে ভোরের বাতাস গায়ে লাগানোর অনুভূতি অন্যরকম প্রশান্তির। তাছাড়া ফজরের কুরআন তেলাওয়াতের গুরুত্বের কথা সরাসরি কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন।
সখর গামেদি (রা.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দোয়া করেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুর অংশ বরকতময় করুন। (তিরমিজি, হাদিস : ১১৯৫)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, ‘সকালবেলায় রিজিকের অন্বেষণ করো! কারণ, সকালবেলা বরকতপূর্ণ ও সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ৬২২০)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদুরে কন্য ফাতেমা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) ভোরবেলা আমার ঘরে এসে আমাকে ঘুমে দেখতে পেলেন, তখন তিনি আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিয়ে বললেন, ‘হে প্রিয় কন্যা! ওঠো! তোমার রবের পক্ষ থেকে রিজিক গ্রহণ করো! অলসদের দলভুক্ত হয়ো না। কেননা আল্লাহ তাআলা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত মানুষের মাঝে রিজিক বণ্টন করে থাকেন।’
(আত-তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস : ২৬১৬)
সর্বোপরি ভোরের আবহাওয়ায় শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী উপাদান বিদ্যমান থাকে। কোনোভাবেই এটি থেকে নিজেদের বঞ্চিত করা উচিত নয়। ভোর ৪টা বা ৫টায় দিন শুরু করা আর ১০টা বা ১১টায় কর্ম শুরু করার মধ্য পার্থক্য বিস্তর।