
শিশু এবং কিশোরদের জন্যই কথাগুলো
তোমাদের কত চাপ, সে কি আমরা জানি না? পড়াশোনা, এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাকটিভিটি… সব সামলে বন্ধুদের মধ্যে ‘পপুলারিটি কোশেন্ট’ও তো বজায় রাখতে হবে! ফলে সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলে চলবে না। যতক্ষণ সামনাসামনি দেখা হচ্ছে, তার বাইরেও যোগাযোগ রাখতে হবে সকলের সঙ্গে। সোশ্যাল মিডিয়া থাকতে তাতে অসুবিধাও হয় না। খালি মুশকিল হয় যখন এত সব করে নিজেকে ভাল রাখার সময়টুকু আর থাকে না। কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখবেই। তা হলেই দেখবে তুমি সুস্থও আছ, খুশিও আছ!
দিন শুরু হোক সকালবেলা
বেশ রাত অবধি জেগে থাকা মোটেও নয় বরং রাতের প্রথম চার ঘন্টার মধ্যেই সব গুছিয়ে ফেলবে। কাকা ঢাকা ভোরে ঘুম ভাংতে হবে,সূর্য মাথার উপর উঠে পড়া অবধি অপেক্ষা কোরো না। যদি অনেক রাত অবধি জেগে থেকে, ঘুম থেকে উঠেই স্কুল-কলেজ-টিউশনে দৌড়ও, দেখবে প্রচন্ড ক্লান্ত লাগে। যা পড়ানো হচ্ছে, মস্তিষ্ক অতটাও অ্যাবজ়র্ব করতে পারে না। যদি ঠিকঠাক সময় ঘুমিয়ে, মোটামুটি সকালে উঠে পড়তে পারো, স্ট্রেস লেভেল কম থাকে। ঘুমও ভাল হয়। ফলে শরীর-মন, দুইই তরতাজা থাকে।
খেলাধুলো করে যে
তার ফিট থাকা কেউ আটকাতে পারবে না। অনেকে কম বয়স থেকেই জিমে জয়েন করে শরীরচর্চা করে। সেটা যদি না-ও করো, শরীরকে অ্যাকটিভ রাখতে, ঘাম ঝরাতে এবং তার সঙ্গে মনও ভাল রাখতে রোজ কিছুটা সময় বাইরে বেরিয়ে খেলাধুলো করা আবশ্যিক। ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেট বল, কবাডি, খো-খো… প্রতিটা খেলাতেই শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মাথা এবং মনেরও এক্সারসাইজ় হয়। দিন ভর যতই চাপ থাকুক, কিছুটা সময় খেলাধুলোর পিছনে দিতেই হবে। তা হলে ভার্চুয়াল দুনিয়া থেকে বেরিয়ে সামনাসামনিও স্বাস্থ্যকর ইন্টারঅ্যাকশন হবে সমবয়সিদের সঙ্গে।
স্ক্রিন টাইম কমুক
বন্ধুদের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করো। যদি না-ও পারো, ফোনে কথা বলো। তা হলে যোগাযোগটা অনেক দৃঢ় হবে। সারা ক্ষণ স্ক্রিনে সেঁটে থাকলে কিন্তু ক্লান্তি, মেজাজ, মাথা যন্ত্রণা… সবই আক্রমণ করবে অনেক বেশি! অনেক সময় হয়তো কিছুই দেখি না আমরা, খালি স্ক্রোল করে যাই। এটা কিন্তু মানসিক অস্থিরতা, মনঃসংযোগ না করতে পারার লক্ষণ। মনঃসংযোগ বাড়াতে মেডিটেশন শুরু করতে পারো। প্রতিদিনের পাঁচ অক্ত নামাজ সবচেয়ে বড় মেডিটেশান।কিছু না করে যদি পছন্দের বিষয় নিয়ে কয়েক পাতা পড়াশোনা করো, বা চোখ বন্ধ করে প্রিয় গানটা শোনো— তা হলেও দেখবে মন অনেক শান্ত, স্থির হবে।
‘পারব না’ ভেব না
খেলতে যাওয়া, মেডিটেট করা, টেক্সটের বদলে ফোনে কথা বলা,সময়মত নামাজ পড়া… এত কিছুর সময় কখন পাবে, তাই তো? ভেবে দ্যাখো, বেলা করে ওঠার বদলে সকালে উঠে, বা অর্থহীন স্ক্রলিং কমিয়ে বেশ কিছুটা সময় কিন্তু তুমি বাঁচিয়েও ফেলেছ! এই সময়টুকু নিজের ভাল থাকার পিছনে খরচ তো করতেই পারো, তাই না? আসলে আবার ওই প্রায়ারিটাইজ় করার কথাই চলে আসে। কোন কাজটাকে গুরুত্ব দিলে তুমি ভাল থাকবে আর কোনটাকে গুরুত্ব দিলে স্ট্রেস বাড়বে… সেটা কিন্তু নিজে ভেবে দেখলেই বুঝতে পারবে। নতুন বছরের গোড়া থেকেই তাই সময় দাও তরতাজা থাকার পিছনে… শুধু শরীরে নয়, মনেও!
-সানন্দা ম্যাগাজিন থেকে অংশবিশেষ সামান্য সম্পাদনাসহ : জামান